EDITOR
- ৫ জানুয়ারী, ২০২২ /

আমিনুল হক:
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপূর্ব নিদর্শন সুন্দরবন। সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র, পরিবেশ ও নদ-নদী রক্ষার্থে কাজ করছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর উদ্যোগে ৩ দিন ব্যাপী “বাংলাদেশ উপকূলে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক কৌশলগত কর্মশালা ২০২১/২২ ” শুরু হয়েছে ৩ জানুয়ারি।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচী চলছে। হাতে কলমের পাশাপাশি সরজমিন মাঠে ময়দানে কৌশলগত বিষয়ে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। এখানে সভাপতি ও সঞ্চালক হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল। এছাড়াও অতিথি হিসেবে রয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী, জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থার বায়োমেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের জাতীয় বিশেষজ্ঞ এস.এম আরাফাত, গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন এর সাধারণ সম্পাদক ও ইউরোপিয়ান ক্লাইমেট ফাউন্ডেশন এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি মনোয়ার মোস্তফা, বন্যপ্রাণী গবেষক ফরহাদ আহসান পাভেল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) খুলনা বাগের হাট জেলার আহ্বায়ক ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার নুর আলম শেখ। উপস্থাপনায় ছিলেন, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর গবেষণা ও বাস্তবায়ন এবং ব্যবস্থাপক রিয়াসাত নুর৷
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)”র কক্সবাজার জেলা সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক ফজলুল কাদের চোধুরী, মহেশখালীর শিক্ষক ও সাংবাদিক আমিনুল হক সহ বিভিন্ন এলাকার বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্সের প্রতিনিধিগন। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের অপূর্ব নৈসর্গিক স্থান খুলনার সুন্দরবন। এই সুন্দরবন রক্ষায় কাজ করছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ। এই সুন্দরবনের বুকেই জেগে ওঠেছে একটি চর। যার নাম দেওয়া হয়েছে বঙ্গবন্ধু চর। এই বঙ্গবন্ধু চর বিশাল একটি জায়গা জুড়ে রয়েছে। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, কাঁশবন সহ বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তুও রয়েছে৷ বনবিভাগের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে বাঘের পায়ের চাপ, বাঘের মল দেখা গেছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, এখানে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। কাশঁবনে কোন পর্যটককে একা একা চলাফেরা করতে নিষেধ করা হয়েছে। সুন্দরবনে আরো রয়েছে হিরণ পয়েন্ট। এই হিরন পয়েন্টের মাঝখানে প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি জেটি রয়েছে। জেটির শেষ প্রান্তে রয়েছে ৫ তলা ভবনের উঁচু পরিমান একটি টাওয়ার। এই টাওয়ারের এক্কেবারে উপরে ওঠলে দেখা যায় হিরন পয়েন্টের সার্বিক চিত্র। এখানেও পর্যটককে একা একা চলতে নিষেধ করে ঝুলানো হয়েছে খুলনা বনবিভাগের পক্ষ থেকে সাইনবোর্ড। এখানেও বাঘের পায়ের চাপ দেখা গেছে। হিরন পয়েন্টের বিপরিত দিকে রয়েছে নীলকমল অভয়ারণ্য। এখানে কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে। দায়িত্বে রয়েছেন কোস্টগার্ড। পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীও জলে এবং স্থলে অবস্থান করছে। সুন্দরবনের আরেকটি চর হচ্ছে দুবলার চর। এই দুবলার চরে রয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তারা অস্থায়ী ভাবে এখানে বসবাস করছেন । তাদের একমাত্র কর্ম হচ্ছে মাছ শুকানো। তারা বছরে মাত্র ৫ মাস এখানে থাকেন বলে জানা গেছে। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা ব্যবসায়ীক কাজে এই দুবলার চরে আসেন এবং থাকেন বছরের ৫ মাস। বর্ষাকালে এখানে জোয়ার ভাটা হয় বলে অন্য সময়ে থাকা সম্ভব হয়না। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই দুবলার চরে আসেন। প্রতিদিন বিকাল বেলা এখানে কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফ সী বীচের মতো পর্যটকরা আসেন। এছাড়াও তিনকোনা আইল্যান্ড, কোকিলমনি, তিনকোনা খাল, হাড়বাড়িয়া ও করমজল সহ আরো বহু জায়াগা উল্লেখযোগ্য। এই সুন্দরবন ভ্রমণ করতে হলে বনবিভাগের অনুমতি নিতে হয় বলে জানা গেছে। অনুমতি নেওয়ার পর পর্যটকদের সাথে বন বিভাগের একজন গান ম্যানও দেওয়া হয়। সরজমিন সুন্দরবন ঘুরে দেখা গেছে যে, কালের বিবর্তনে অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে, বাংলার ফুসফুস খ্যাত সুন্দরবন। হারিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র। হারিয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ৷ এসব কিছু রক্ষা করতে হলে সরকারকে পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। সরকারের পাশাপাশি দায়িত্ব নিতে হবে বেসরকারী পরিবেশবাদী সংগঠনকে।
ভয়েস/আআ